Home International মুক্ত এশিয়া গড়বে কোয়াড

মুক্ত এশিয়া গড়বে কোয়াড

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, মুক্ত ও উদার এশিয়া গড়ে তোলা চারদেশীয় জোট কোয়াডের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, বিশ্বকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ করে তুলতে কোয়াড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। ভারতীয় সময় শুক্রবার রাতে ওয়াশিংটনে এই জোটের প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। মোদি বলেন, চার দেশ তাদের গণতান্ত্রিক ধ্যান–ধারণা ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে কোয়াডের সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তার করবে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল তো বটেই, বিশ্বে শান্তি স্থাপনেও এই জোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।বিজ্ঞাপনবিজ্ঞাপন

ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে গড়ে তোলা এই সহযোগিতা জোটের চার শীর্ষ নেতা এই প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনের সময় এই শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছাড়া এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।

কোভিড সমস্যা ও তার মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তন ও সন্ত্রাসবাদ ছাড়াও বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চার শীর্ষ নেতা মতবিনিময় করেন। এই সম্মেলনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের তিন রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। কোয়াড ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়বস্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রচার করা হয়েছে।

কোয়াড সম্মেলনের শুরুতেই ভাষণ দেন মোদি। হিন্দিতে দেওয়া সেই ভাষণে তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে সুনামির পর আমরা প্রথম সাক্ষাৎ করেছিলাম। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়নই ছিল লক্ষ্য। এখন আবার একত্র হয়েছি এমন এক সন্ধিক্ষণে, গোটা বিশ্ব যখন কোভিড অতিমারিতে বিধ্বস্ত। মানবতার কল্যাণ এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য।’বিজ্ঞাপন

মোদির মতোই বাইডেন, সুগা ও মরিসন তাঁদের ভাষণে বিবিধ সমস্যার সম্মিলিত সমাধানের উদ্যোগের ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে দখলদারি থেকে মুক্ত রাখার ওপর জোর দেন। তাঁরা বলেন, সমস্যা ও মতপার্থক্য থাকেই। তবে তা মতানৈক্যে যাতে পরিণত না হয়, সে জন্য গণতান্ত্রিক দেশের অগ্রণী হওয়া উচিত। কোয়াডের লক্ষ্যও তা–ই। সব নেতাই আন্তর্জাতিক আইন মেনে সমস্যার সমাধানের পক্ষে মত দেন।

কোয়াড বৈঠকের আগে মোদি দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বাইডেন, মরিসন ও সুগার সঙ্গে। এই বৈঠকগুলোর প্রধান লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সুস্থিতি এবং শান্তি স্থাপন। আফগানিস্তানের পালাবদল এই অঞ্চলকে এক আশঙ্কার মুখে দাঁড় করিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বন্ধুদেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে ভারত উদ্যোগী, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় বলে মনে করে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের সম্প্রসারণবাদের মোকাবিলায় গণতন্ত্রী জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সাহচর্য ভারত যেমন জরুরি মনে করছে, তেমনই ওই দুই দেশের কাছেও ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজনীয়। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে মোদির বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে উন্মুক্ত, উদার ও সমৃদ্ধ করতে এবং আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধিতে আগ্রহী। সেই লক্ষ্যে দুই নেতা আলোচনা করেছেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী সুগার সঙ্গে মোদির সরাসরি আলাপ এই প্রথম। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দুই নেতার বৈঠক নিয়ে বলা হয়, আলোচনায় সমরাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি গুরুত্ব পেয়েছে। আলোচনা হয়েছে আফগানিস্তানসহ আঞ্চলিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও। কোয়াড শীর্ষ সম্মেলন ও চার সদস্যদেশের নেতৃত্বের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার উপায়ও প্রাধান্য পায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here