ট্যাক্স অফিস অভিবাসী শ্রমিকদের হাজার হাজার ডলার ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করছে যাদেরকে মহামারীর সবচেয়ে খারাপ সময়ে জবকিপারের মজুরি ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অনেক ভুক্তভোগীকে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত পেমেন্ট ফেরত দেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে
- কয়েক ডজন মানুষ একই পরিস্থিতির শিকার
- ওয়ার্কার্স সেন্টার প্রায় এক লক্ষ ত্রিশ হাজার ডলারের জবকিপার ঋণ মওকুফ করতে সাহায্য করেছে
সরকারী পেমেন্টগুলি খুব তাড়াতাড়ি দেয়া হয়েছিল এবং কর্মীদের যোগ্যতা আছে কিনা তা নিজ থেকে মূল্যায়ন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল … আর এখন আবিষ্কার করা হয়েছে যে তাদের ভুলভাবে অর্থ প্রদান করা হয়েছিল।
এসবিএস নিউজের কাছে রিপোর্ট এসেছে যে অনেককে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত ঋণের নোটিশ দেয়া হয়েছে।
উবার ড্রাইভার হিসেবে হাসান জাবেরের কাজ প্রায় রাতারাতি কমে যায়।
যখন মহামারী আঘাত হেনেছিল এবং লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন লক্ষ লক্ষ অস্ট্রেলিয়ানদের মতো তিনি আর্থিক সাহায্যের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।
তিনি বলেন, আমি খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম এবং আমি আমার ট্যাক্স এজেন্সির কাছে গিয়েছিলাম, তাকে জিজ্ঞাসা করেছি আমি জবকিপারের যোগ্য কিনা – তারা আমাকে পরামর্শ দিয়েছে যে হ্যাঁ, আমি যোগ্য।
মি: জাবের ওয়েজ সাবসিডির (মজুরি ভর্তুকি) জন্য আবেদন করেছিলেন এবং তার আবেদন টেম্পোরারি প্রটেকশন ভিসায় থাকা এবং যোগ্যতার মানদণ্ডের বাইরে থাকা সত্ত্বেও গৃহীত হয়েছিল।
প্রায় এক বছর আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পর তিনি একটি ডেট লেটার (ঋণপত্র) পেয়েছেন যেখানে সব পেমেন্ট ফেরত চাওয়া হয়েছিল।
মিঃ জাবের বলেন, সত্যি বলতে কি আমি খুবই অবাক হয়েছি, এটা তো আর ৫০ বা ১০০ ডলার নয় যে ফেরত দিয়ে দেয়া যায়। প্রায় ২৭,০০০ ডলার। আমি খুবই অস্থির হয়ে পড়ি, লকডাউন চলছে, কি করব বুঝতে পারছিলাম না।
তিনি এখনও বেকার এবং দৈনন্দিন খরচ বহন করতে অক্ষম। মি: জাবের আপিল করেন এবং ট্যাক্স অফিস সাড়া দেয় এটা বলে যে তারা ১৯,০০০ ডলার ছাড় দিয়েছে, এখন শুধু ৮,৫০০ ডলার ফেরত দিতে হবে।
আমি বলেছি, “আমি কিছুই ফেরত দেব না, এটা তো আমার ভুল নয়, আমি তখন একটা আপত্তি পত্র দিলাম।”
ট্যাক্স অফিস অবশেষে রিপেমেন্ট মওকুফ করতে সম্মত হয়।
এবং এই দপ্তরের দায়িত্বে থাকা এমপ্লয়মেন্ট মিনিস্টার, স্টুয়ার্ট রবার্ট বলেছেন, ত্রুটিগুলি সংশোধন করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটিও (ATO) অথবা সার্ভিসেস অস্ট্রেলিয়া ভুল করেছে, সেক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্ট সাধারণত রিপেমেন্ট মওকুফ করে থাকে, তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটে না। কিন্তু আইন না বোঝা এবং বিভাগ ভুল করার মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করা গুরুত্বপূর্ণ।”
কিন্তু মাইগ্রেন্টস ওয়ার্কার্স সেন্টারের শিল্প কর্মকর্তা ওয়ালেস হুয়াং-এর মতে, মানসিক ক্ষতি যা হবার তা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, “যখন আপনি মেইলে একটি চিঠি পান এবং সেখানে বলা হয় যে আপনি সরকারের কাছে ১০,০০০ ডলার বা তার বেশি অর্থ ঋণী তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেক মানুষ আতঙ্কিত হবে কারণ তাদের কোন ধারণা নেই যে তারা কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে।”
ওয়ালেস হুয়াং বলেন, কয়েক ডজন মানুষ একই পরিস্থিতির শিকার।
তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত ২২ জন আমাদের কাছে এসেছেন, যাদের মধ্যে ১৭ জনের সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং প্রায় পাঁচজনের বিষয় এখনও চলছে, ATO এখনও সমস্যাগুলি নিয়ে কাজ করছে। প্রটেকশন ভিসায় অনেক লোক রয়েছে। তারা ইন্ডিপেন্ডেন্ট কন্ট্রাক্টার, যেমন উবার ড্রাইভার এবং, অবশ্যই ইংরেজি তাদের প্রথম ভাষা নয়।”
ওয়ার্কার্স সেন্টার প্রায় এক লক্ষ ত্রিশ হাজার ডলারের জবকিপার ঋণ মওকুফ করতে সাহায্য করেছে।
এসবিএস নিউজকে দেয়া এক বিবৃতিতে, ট্যাক্স অফিস নিশ্চিত করেছে যে এটি ইতিমধ্যে জবকিপারের অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করেছে।
যদিও তারা ৬০ মিলিয়নেরও বেশি অর্থ মওকুফ করেছে, তবে তারা এটিকে “অনেস্ট মিসটেক” বলতে চায়। এটিও এখনও আরো ৮২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল ফেরার পেতে চেষ্টা করছে যা তারা দাবি করে যে ওই অর্থ ভুলভাবে প্রদান করা হয়েছিল।
পার্লামেন্টে ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ এমন পেমেন্ট গ্রহীতাদের খোঁজার বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, তাদের এই অর্থ পাওয়া উচিত ছিল না।
তিনি বলেন, যারা পেমেন্ট নিয়েছে তাদের বাধ্যবাধকতা আছে। যারা ওয়েলফেয়ার পেমেন্ট পান তারা জবকিপার পেমেন্টকে তাদের অন্য সাধারণ আয়ের মত বিবেচনা করতে হবে।
কিন্তু গ্রিনস লিডার অ্যাডাম ব্যান্ড্ট বলেন, এখানে বিলিয়নিয়ারদের জন্য একটি নিয়ম এবং যারা কষ্টে আছে তাদের জন্য আরেকটি নিয়ম।
তিনি বলেন, “সরকার বড় বড় কর্পোরেশন এবং বিলিয়নিয়ারদের জবকিপারের পেমেন্ট হিসেবে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হস্তান্তর করেছে এবং তারা সেই অর্থ ব্যবহার করেছে প্রাইভেট জেট কিনতে এবং এক্সিকিউটিভ বোনাস দিতে এবং এরই মধ্যে মহামারী চলাকালীন সময়ে যারা সবচেয়ে কঠিন-কষ্টকর কাজগুলো করছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ পেমেন্ট পেয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে যেটাকে তারা তাদের আইনত পাওনা মনে করেছিল এবং আর এখন সরকার তাদের পেছনে লেগেছে।”