ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হলে নতুন করে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই দখলকৃত পশ্চিম তীর, আল-আকসাসহ বেশি কিছু জায়গায় ইসরায়েলি বাহিনী নিয়মিত আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন হামাসের অন্যতম মুখপাত্র সামি আবু জুহরি। শুক্রবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান।
গত মাসেই ইসরাইল-ফিলিস্তিন বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিলো। ১১ দিনের লড়াইয়ে দু’পক্ষের আড়ই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। উভয়পক্ষের সম্মতিতে যুদ্ধবিরতি চললেও তা কতদিন বলবৎ থাকবে এ নিয়ে ঘোর সন্দিহান ফিলিস্তিনিরা।
আনাদোলুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাস মুখপাত্র সামি আবু জুহরি বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও আগ্রাসন বন্ধ না হলে যে কোনও মুহূর্তে নতুন করে যুদ্ধের শুরু হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশের চাপে বাধ্য হয়েই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তেল আবিব। তবে এই বিরতি কতদিন অব্যাহত থাকবে এ নিয়ে প্রবল আশঙ্কা হামাসের।
তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিস থেকে হামাসের মুখপাত্র বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে সম্নান না দেখিয়ে প্রতিদিনই পশ্চিম তীরের শহরে আগ্রাসন চালাচ্ছে। তারা তো আল-কুদস শহরের ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে যে কোনও মুহুর্তে আবারো যুদ্ধ শুরু করতে বাধ্য হবে হামাস।’
ইসরায়েলি গোলার আঘাতে এখনো লণ্ডভণ্ড গাজা উপত্যকা। ত্রাণ সহযোগিতার অপেক্ষায় বহু মানুষ। যা ছিলো সবই চোখের সামনে স্বপ্নগুলো মাটিতে মিশে গেছে ১১ দিনের যুদ্ধে। হতাশা গাজার অধিকাংশ মানুষের চোখে মুখে। এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ-এর সামনে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনিরা।
আবু জুহুরি উল্লেখ করেন, ‘মিশরের মধ্যস্থতায় গত ২১ মে থেকে যে দুর্বল যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে আসছে ফিলিস্তিনের জনগণ। কিন্তু এটি টিকে থাকা নির্ভর করছে তেল আবিবের উপরই। সুতরাং ইসরায়েলের সহযোগিতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় সংঘাত অনিবার্য’।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে ১১ দিনের ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৬০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৬ শিশু, ৪০ জন নারী এবং ১৬ জন বৃদ্ধ রয়েছেন। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি।