মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর ভয়-আতঙ্কের মধ্যেও প্রতিবাদ হয়েছে। এবার এই আন্দোলনে গতকাল শুক্রবার সামিল হলেন শিক্ষকেরা। এ দিন ইয়াঙ্গুনসহ কাচিন ও রাখাইন রাজ্যের সিতওয়ে শহরে শিক্ষকেরা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
ভোটে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে গত সোমবার সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা নেওয়ার প্রতিবাদে ঘটনার দুদিনের মাথায় গত বুধবার প্রথম প্রতিবাদে নামেন দেশটির চিকিৎসকেরা। অন্তত ৩০টি শহরের ৭০টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মবিরতি পালন করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানায়।
এনএলডি নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চিসহ সব রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবি জোরদার করতে এবং সেনা শাসনের অবসান ঘটাতে সিভিল ডিজওবিডিয়েন্ট মুভমেন্ট গঠন করা হয়েছে। আস্তে আস্তে গতি পাচ্ছে এই সিভিল ডিজওবিডিয়েন্ট মুভমেন্ট।
মিয়ানমারের কাচিন শহরে শুক্রবার সেনা শাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেন শিক্ষকেরা। ছবি : সংগৃহীত
ইয়াঙ্গুনের দাগোন ইউনিভার্সিটির বাইরে গতকাল শুক্রবার দুপুরে কয়েকশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জড়ো হন। তারা দেশের পতাকা হাতে নিয়ে অং সান সু চির সমর্থনে স্লোগান দেন।
শুক্রবার বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক বিবিসিকে বলেছেন, তাঁরা পরবর্তী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
এ ছাড়া মিন সিথু নামের এক শিক্ষার্থী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রজন্মকে এই ধরনের সামরিক স্বৈরাশাসনের ভোগান্তিতে পড়তে দেব না।’
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে থালা-বাটি বাজিয়ে সেনাশাসনের বিরোধিতা করে।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ নির্বাচিত সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করে গত সোমবার দেশটির ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনারা। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন সেনাপ্রধান ও সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। সেনাবাহিনীর দাবি, সু চির দল এনএলডি অনিয়ম করে ওই নির্বাচনে একচেটিয়া জয়লাভ করেছে।
এরই মধ্যে সু চির সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে বরখাস্ত করে সেনাসদস্যদের দিয়ে নতুন করে কেবিনেট গঠন করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ।