ধনী দেশগুলোকে বাড়তি করোনার টিকা মজুত না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। এবার একই আহ্বান জানালেন দেশটির শীর্ষ মহামারি বিশেষজ্ঞ সালিম আবদুল করিম। তিনি ধনী দেশগুলোর এমন আচরণকে ‘বিবেকহীন’ বলে মনে করেন। সেইসঙ্গে সবাইকে সতর্ক করে সালিম আবদুল করিম বলেছেন, ‘সবাই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউ-ই নিরাপদ নয়।’ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের করোনাভাইরাস বিষয়ক উপদেষ্টা প্যানেলের চেয়ারম্যান সালিম আবদুল করিম বলেন, ‘শুরু থেকেই কয়েকটি দেশ একটা ভুল ধারণা বিশ্বাস করে আছে যে তারা নিজেদের জনগণকে টিকা দিতে পারলেই নিরাপদে থাকবে।
‘এটা একদমই সত্য নয়। যে পৃথিবীতে আমরা বাস করি, এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে, সেখানে সবাই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউ-ই নিরাপদ নয়।’
বিশ্বের সব দেশের জনগণকেই টিকার আওতায় আনা আবশ্যক বলে মনে করেন সালিম আবদুল করিম। অন্যথায় কোভি-১৯-কে পরাজিত করতে ‘ইঁদুর-বিড়াল’ খেলার মতো প্রতিনিয়ত নতুন টিকা উদ্ভাবন করে যেতে হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
সালিম আবদুল করিম বলেন, ‘এমনটা হওয়া একেবারেই সম্ভব নয় যে, কোনো একটি দেশ ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণ করে ফেলল, আর বিশ্বের বাকি দেশগুলোতে সংক্রমণ রয়েই গেল। আমার মতে, আমাদের সবাইকে এক হতে হবে, সম্মিলিতভাবে মহামারিকে মোকাবিলা করতে হবে। এতে সবারই লাভ হবে।
‘আমি মনে করি, বিবেকহীনের মতো কাজ হবে যদি দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিতে থাকা তরুণদের টিকা দেওয়া শুরু করল, অথচ এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা বয়স্কদেরই টিকা দিতে পারছি না।’
‘যা অবস্থা দেখছি, তাতে তেমনটাই হতে যাচ্ছে’, সতর্ক করেন সালিম আবদুল করিম।
দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন আবিষ্কার করেছেন দেশটির শীর্ষ জেনেটিক বিজ্ঞানী অধ্যাপক টুলিও ডি অলিভেইরা। দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলীয় শহর ডারবানে একটি গবেষণাগারের দায়িত্বে আছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ভ্যারিঅ্যান্ট বা ধরনের খোঁজ পাওয়ার পর দেশটি থেকে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। কিন্তু এমন পদক্ষেপকে অকার্যকর বলে মনে করেন অধ্যাপক টুলিও ডি অলিভেইরা। তিনি বলেন, ‘একটা দেশের জন্য এমন কড়াকড়ি দেওয়া—আমার কাছে এটাকে অনেকটাই অর্থহীন বলে মনে হয়েছে। কারণ, আমরা জানি এই ভাইরাস কতটা দ্রুত এবং কত জায়গায় ছড়াতে পারে।’
অধ্যাপক টুলিও ডি অলিভেইরা বলেন, বিশ্বের দেশগুলোর সরকারের উচিত ভাইরাস নিয়ে ‘জাতীয়তাবাদ’ বন্ধ করে সব আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীর জন্য সমভাবে বড় পরিসরে কোয়ারেন্টিন নীতিমালা গ্রহণ করা।