ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটির কাজ শুরু হতে এখনও বেশ কয়েকটি স্তর পার হতে হবে। তবে প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে বাণিজ্যিকভাবে চালু করা আর প্রতারিত গ্রাহকদের জন্য কিছু করতে পারার বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছেন কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। সোমবার (১৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের নির্ধারণ করে দেওয়া কমিটিতে থাকা অন্য সদস্যরা হলেন, সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, মাহবুবুল কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ ও ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। ১২ অক্টোবরের মধ্যে ইভ্যালির নথিপত্র দাখিল করতে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে আদেশের ধারাবাহিকতায় গত ১১ অক্টোবর ইভ্যালির সব নথি হাইকোর্টে দাখিল করে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ।
শুরুতে ইভ্যালির গ্রাহকদের জন্য কোনও সুখবর থাকছে কিনা প্রশ্নে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি এখনও আদেশের কপি পাইনি। পাওয়ার পরে অন্য চার জনের সঙ্গে বসতে হবে। আলাপের আগে পরিকল্পনা নির্ধারণ মুশকিল’। তবে তিনি মনে করেন, ‘প্রথম কাজ হবে ইভ্যালিকে সক্ষম বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিরিয়ে আনা। আর প্রতারণার সুযোগ যেন না পায় সেদিকে নজর দেওয়া এবং এখানে অর্থ লগ্নি করে যারা প্রতারিত হয়েছে তাদের জন্য কিছু করা যায় কিনা সেটা দেখা দরকার। এখনও এসবই প্রাথমিক ভাবনা। এরপরে কমিটির সবাই মিলে বসে করণীয় নির্ধারণ করা হবে’।
বিষয়টিকে বিরাট চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে কমিটির সদস্য মাহবুবুল কবীর মিলন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এত মানুষের চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা, সেটা পূরণে শক্তিশালী রূপরেখা দরকার হবে। এখনও সরকারের গেজেট হয়নি, টার্মস অব রেফারেন্স তৈরি হবে। তারপর কাজ হবে। ইনশাআল্লাহ একটা রাস্তা বের হবে এবং ভালো কিছু করা যাবে’। তিনি বলেন, ‘কোনও কোম্পানি যদি এগিয়ে আসে তাহলে দাঁড় করানোর রাস্তা বের হয়ে আসবে। প্রতারিত গ্রাহকের টাকা নিয়ে যা হয়েছে একটা রাস্তা তো বের করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, একজন ক্রেতা ইভ্যালিতে পণ্য অর্ডার করার পাঁচ মাস পরও তা বুঝে না পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকারে বারবার অভিযোগ করেন। কিন্তু তাতে কোনও প্রতিকার না পাওয়ায় ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি-হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। একই সঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশ জারি করেন আদালত।
আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।