Home Bangladesh শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় অনেক ‘যদি-কিন্তু’ আছে, চেষ্টার কমতি নেই: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় অনেক ‘যদি-কিন্তু’ আছে, চেষ্টার কমতি নেই: শিক্ষামন্ত্রী

করোনার ভয়াবহ প্রকোপ ঠেকাতে দেশব্যাপী জারি করা কঠোর বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে অফিস-আদালত, মার্কেট-শপিং মল খোলার পাশাপাশি চলছে গণপরিবহনও। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঠিক কবে থেকে খোলা হবে তা নিয়ে চলছে আলোচনা। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে অনেক ‘যদি-কিন্তু’ থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টার কোনও কমতি নেই। যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সবধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বুধবার (১১ আগস্ট) একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত টকশো একাত্তর জার্নালে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান এবং সাংবাদিক জিয়াউর রহমান।

করোনা সংক্রমণের হার কমে ঠিক কতো শতাংশে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে সংক্রমণের হার ক্রমশ কমে আসছে; এক সপ্তাহ আগে শতকরা ৩০ এর উপরে ছিল, আজকে ২৩-এ নেমে আসছে। আজকে (বুধবার) আবার সব খুলে দেওয়ার পর এক সপ্তাহ পরে এটা (সংক্রমণে হার) কী হবে আমরা জানি না। তবে আশা করবো এটা নিম্নমুখি থাকবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সংক্রমণের হার শতকরা ৫ বা তার নিচে নেমে আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য নিরাপদ। এখন আমরা সেটাকেই ধরে রাখবো, নাকি মোটামুটি একটা অবস্থা দেখবো, সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ না হোক কাছাকাছি একটা সংখ্যায় আসলে চতুর্দিকে একটা অবস্থা আমরা বুঝতে পারি যে, না, এখন খুলে দেওয়া যেতে পারে। আসলে এর মধ্যে অনেক ‘যদি’ আছে, অনেক ‘কিন্তু’ আছে। তবে এটুকু বলতে চাই যে, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের খুব চেষ্টা আছে। আমরা যত দ্রুত পারি, আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি।

শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা বাবা-মায়ের সমস্যাটা বুঝতে পারছি, সবচেয়ে বড় সমস্যা আমাদের শিক্ষার্থীদের; তাদের অবস্থাটাও বুঝতে পারছি। তাদের (শিক্ষার্থী) অনেকেই হতাশায় ভুগছে, ভোগাটাও স্বাভাবিক- আসলে তারাতো স্বাভাবিক একটা জীবনে নেই।…তবে সবকিছুর পরও আমি বলবো যেভাবে পারা যায়, সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি নতুন কিছু একটু শেখা যায়।

এবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে বলছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশন শেষ না হলে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিকার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন ১৮ বছর পর্যন্ত নামিয়ে আনার। ধাপে ধাপে এটা নেমে আসবে। তবে আমরা যেটা প্রত্যাশা করছি, এর কারণ হলো গত বছরের অভিজ্ঞতা। গতবছর নভেম্বরের দিকে সংক্রমণ কমে এসেছিল। এবছর এরই মধ্যে টিকাও নিয়ে নিয়েছেন, আবার অনেকেই এরই মধ্যে সংক্রমিত হয়ে সুস্থও হয়েছেন। আর ওই সময়টাতে সংক্রমণ যদি একটু কম আসে এবং আমরা যদি সবাই একটু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি- আমরা হয়তো অক্টোবরের শেষে, নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে একটা ভালো অবস্থানে পৌঁছাবো। আমরা আশা করছি, যেন আমরা ভালো অবস্থায় পৌঁছাতে পারি এবং পরীক্ষাটা নিতে পারি। 

এসময় তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের হাতে এই অতিমারি মোকাবিলায় তেমন কিছু নেই। তবে যেটা আছে সেটা হলো স্বাস্থ্যবিধির পরিপালন। আমরা সবাই সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমাদের সংক্রমণের হার একেবারেই কমিয়ে আনা সম্ভব।

শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাইছি শিক্ষার্থীদের.. (টিকা দিতে), যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাই। আসলে অন্য সবকিছুই খোলা আছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নেই। আমরা পড়াশোনাটা অন্যভাবে চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। যতদূর সম্ভব… কিন্তু একেবারে ক্লাসে বসে মুখোমুখি পাঠদানের যে বিষয়টি তারতো খুব ভালো বিকল্প নিশ্চয়ই আমরা ব্যবস্থা করতে পারিনি। আমরা এই অবস্থা পরিপ্রেক্ষিতে যতটুকু ভালো করা সম্ভব, সেটুকু করার চেষ্টা করছি। সেজন্যই আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার। তবে এটা প্রাপ্যতারও বিষয় রয়েছে। নিশ্চয়ই যারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তাদের অগ্রাধিকারের বিষয় আছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় অনেক রকম অগ্রাধিকারের বিষয় চিন্তা করেই এটা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে… মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন যে, আমরা যত দ্রুত পারি শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দিয়ে দিতে চাই।

বেশির শিক্ষকের এরই মধ্যে ভ্যাকসিনেশন হয়ে গেছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রায় সব শিক্ষকের টিকা দেওয়া শেষ, আর যারা বাকী রয়েছেন সামনের সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে সবশেষ গত ২৯ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here