গৃহযুদ্ধ কবলিত লিবিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তি স্থাপনে জার্মানিতে বৈঠকে বসেছে বিশ্ব শক্তিগুলো। এই বৈঠকে আগামী ২৪ ডিসেম্বর উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ সুগমের উপায় খোঁজা হবে। জাতিসংঘের আয়োজনে বুধবার বার্লিনের এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, মিসর ছাড়াও লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বার্লিনে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ফ্রান্স ও মিসরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, লিবিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের একমাত্র উপায় হিসেবে আগামী ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সার্বভৌম, স্থিতিশীল, ঐক্যবদ্ধ, নিরাপদ এবং বিদেশি হস্তক্ষেপ মুক্ত লিবিয়া প্রতিষ্ঠার অংশীদার। এটা বাস্তবায়ন করতে ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রয়োজন। তার অর্থ হলো জরুরি ভিত্তিতে সংবিধান ও আইনগত ইস্যুতে চুক্তি হওয়া প্রয়োজন।’
লিবিয়া সংকট নিরসনে দ্বিতীয়বারের মতো বার্লিনে বৈঠক বসেছে। ২০২০ সালে একই ধরনের অপর বৈঠকে যোগ দেন তুরস্ক, রাশিয়া এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টরা। তবে এবারের বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতির কারণে বেশি আশাবাদী হয়ে উঠেছেন অনেকেই।
বুধবারের বৈঠকের আগে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস স্মরণ করিয়ে দেন গতবারের বৈঠকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করেনি অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গতবারের বৈঠকে যারা সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো তারা সেই কথা রাখেনি। লিবিয়ার নাগরিকদের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করার আগে এসব সেনাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে। দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারও এটা স্পষ্ট করেছে।’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে মুয়াম্মার আল গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় বিশৃঙ্খলা চলছে। রাজধানী ত্রিপোলিসহ বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় জাতিসংঘ সমর্থিত জাতীয় ঐক্যের সরকার। আর দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় সামরিক কমান্ডার খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাতে। ২০১৪ সালের এপ্রিলে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থনে রাজধানী ত্রিপোলির দখল নিতে অভিযান শুরু করে হাফতার বাহিনী। ত্রিপোলির সরকার রক্ষায় তুরস্ক সামরিক হস্তক্ষেপ করার পর ১৪ মাস পর অভিযান গুটাতে বাধ্য হয় হাফতার বাহিনী। গত বছরের অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে উভয় পক্ষ।