তালেবানের আফগানিস্তান দখলের পর দলে দলে আফগানরা দেশ ত্যাগ করছে। অনেকেই দেশ ছাড়তে বেপরোয়া চেষ্টা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলো আফগান শরণার্থীদের গ্রহণ করলেও বিশ্বের ধনী মুসলিম দেশগুলো এই কাজে এগিয়ে আসেনি। একমাত্র ইরান ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশগুলো তাদের গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকছে।
ইরানে ইতোমধ্যে ৩০ লাখের বেশি আফগান শরণার্থী বাস করছেন। তালেবান কাবুল দখল করার পর ইরান আফগান সীমান্তের তিনটি প্রদেশে জরুরি তাঁবু বসিয়েছে শরণার্থীদের জন্য। ৫৭টি মুসলিম দেশের সংগঠন অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-এর নীতি মেনে বড় সদস্য দেশ হলো ইরান।
ওআইসি’র আরেকটি বড় সদস্য দেশ পাকিস্তান আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পাকিস্তানের মতো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তালেবানের প্রথম শাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এখন ওআইসির নেতৃত্বে রয়েছে সৌদি আরব। কিন্তু আফগান শরণার্থীদের জন্য দরজা উন্মুক্ত করার বিষয়ে তেল সমৃদ্ধ দেশটি এখনও নীরব।
সংযুক্ত আরব আমিরাতও একই অবস্থান নিয়েছে। দেশটি শুধু ভ্রমণ করিডোর হিসেবে পাঁচ হাজার আফগানকে সাময়িক আশ্রয় দিচ্ছে এবং তাও যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে। মাত্র ১০ দিন আমিরাতে থাকতে পারবেন তারা।
বাহরাইনও বলেছে, আফগান শরণার্থীরা দেশটিতে ট্রানজিট সুবিধা নিতে পারবেন। কিন্তু তাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ।
মুসলিম বিশ্ব ও ওআইসি প্রভাব বিস্তার করতে আগ্রহী তুরস্ক জানিয়েছে, তারা আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত না। পুনরায় তুর্কি খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়া প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের কাছে আফগান শরণার্থীরা মুসলিম ভাই নয়, বরং এড়িয়ে যাওয়ার মতো বোঝা। এমনকি আফগান শরণার্থীদের ঢেউ থামাতে ইরান সীমান্তে দেয়াল তুলছে তার প্রশাসন।
মধ্য এশিয়ার তিনটি দেশ তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আগ্রহী না। তিনটি দেশেরই আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। জুলাই মাসে তাজিকিস্তান জানিয়েছিল, তারা ১ লাখ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। কিন্তু একই সঙ্গে আফগান-তাজিক সীমান্তে সেনাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
আলবেনিয়া ও উগান্ডার মতো ওআইসি’র কয়েকটি সদস্য দেশ আফগান শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পরই। আলবেনিয়া ৩০০ এবং উগান্ডা ২ হাজার আফগান শরণার্থীর দায়িত্ব নিয়েছে।