Home Bangladesh তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, গঙ্গাচড়ায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, গঙ্গাচড়ায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। রাতে আরও ১০-১৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় নদী তীরবর্তী এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।বিজ্ঞাপন

পাউবোর রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, দেশের উজানে ভারতের সিকিম, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ রাতে আরও ১০-১৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর, লক্ষ্মীটারি, কোলকোন্দ, নোহালী ও গজঘণ্টা ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চরইশরকুল, ইছলি, পূর্ব ইছলি, পশ্চিম ইছলি ও শংকর, বাগেরহাটহ ছয়টি গ্রামের দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। তবে অনেকেই পানির মধ্যে অবস্থান করছে। এই এলাকার রান্নাঘর, আঙিনাসহ ঘরে কোথাও কোমরসমান, কোথাও হাঁটুপানি।বিজ্ঞাপন

ঘরের মালপত্র উঁচু স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন এক নারী। বুধবার গঙ্গাচড়ার মহিপুর এলাকায়

এই গ্রামের কৃষক রহিম মিয়া বলেন, ‘গেল রাইতোত হঠাৎ নদীর পানি হু হু করি বাড়তে থাকে। দিশেহারা হয়া উঠি। ঘরের মধ্যে চৌকির ওপর বসি থাকা লাগছে। সকাল হওয়ার পর বাড়ি ছাড়িয়া বাঁধোত চলি আসছি।’

মর্জিনা বেগম বলেন, ‘পানিত বন্দী হয়া খুব কষ্টোত আছি। শুকনা জায়গাও নাই যে সেটে উঠমো। কি আর করার আছে।’

লক্ষ্মীটারি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল হাদী বলেন, ইউনিয়নের প্রায় চার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, উত্তর চিলাখাল, সাউথপাড়া, মটুকপুরসহ চার গ্রামের কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে নিরাপদ আশ্রয়ে গেছে। কোলকোন্দ ইউপির চেয়ারম্যান সোহরাব আলী বলেন, পানিবন্দী মানুষকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দ শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। তালিকা করে চাল দেওয়া হবে।

গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, মহিষাসুর, রমাকান্ত, আলালচর, জয়দেব এলাকা এবং নোহালী ও আলমবিদিতর ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here