করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা চুক্তিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ব্রাজিল। শনিবার রাজধানী রিও ডি জেনিরো শহরে তার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। একইসঙ্গে কোভিডে ব্রাজিলে ৫ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তার নীতিকেই দায়ী করেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে দেশটির নাগরিক। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ তো নেননি বরং উদাসীন দেখা গেছে বোলসোনারোকে। সম্প্রতি ভারতে উদ্ভাবিত টিকা কোভ্যাক্সিন কেনার চুক্তিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এতে বেশ বিপাকেই পড়েছেন বোলসোনারো। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে তার বিরুদ্ধে তদন্তে শুরু করছে দেশটির শীর্ষ প্রসিকিউটর।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনা টিকার দুই কোটি ডোজ কিনতে ১৬০ কোটি রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান মুদ্রা চুক্তি করে ব্রাজিল সরকার। কিন্তু সেখানে অতিরিক্ত মূল্য, শুল্কছাড়সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হয় দেশটিতে। এর প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার চুক্তি স্থগিত করে ব্রাজিল সরকার।
এমন পরিস্থিতিতে ব্রাজিলের সাধারণ মানুষের অভিযোগ টিকা চুক্তিতে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল বোলসোনারো সরকার। চলমান বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীরাও। এতে আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছে।
ব্রাজিলের কংগ্রেসের ৭৯ বছর এক নারী বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে সাধারণ মানুষ’। আন্দোলনে যোগ দিয়ে মাগদা সৌজা বলেন, ‘আমি এখানে অংশ নিয়েছি কারণ ব্রাজিল থেকে দৈত্য সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে’।
রাজপথ ছাড়িয়ে অলি গলিতেও ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যায় রাজপথ।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে ব্রাজিল। এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ ২২ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এত মৃত্যুর কারণকে বোলসোনারো সরকারের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন সাধারণ মানুষ। এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ব্রাজিল সরকার দায়ী’। তারা আমাদের জীবনটা বিষাক্ত করে তুলেছে’।
বিশেষ করে ব্রাজিল টিকা দেওয়ার হার খুবই কম। এতে শক্তিশালী করোনা তাণ্ডব চালাচ্ছে দেশটিতে।