মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে গৃহীত জাতিসংঘের রেজুলেশনে ভোটাভুটিতে পক্ষে ভোট দিয়েছে খোদ ওই দেশটি। অবাক করা এই বিষয়টি আসলে বিস্ময়কর নয় কারণ জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্বকারি স্থায়ী প্রতিনিধি (পার্মানেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ) প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারের বিদ্রোহী ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারের পক্ষে কাজ করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউ ইয়র্কে কর্মরত একজন কূটনীতিক বলেন, ‘মিয়ানমারে ক্যু হওয়ার পরে জাতিসংঘে তাদের রাষ্ট্রদূত পক্ষ ত্যাগ করে বিদ্রোহী ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারের পক্ষে কাজ করছে। ওই ব্যক্তি প্রায়শই সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দিয়ে মিয়ানমারে হামলা বা আক্রমণ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে থাকেন।’
মিয়ানমার তার প্রতিনিধি কেন পরিবর্তন করছেনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ক্রেডেনশিয়াল কমিটির কাছে প্রতিবছর নতুন রাষ্ট্রদূতরা তাদের পরিচয়পত্র পেশ করার পরে ওই ব্যক্তি জাতিসংঘে কাজ করতে পারে। ৭৫তম অধিবেশনের জন্য সব রাষ্ট্রদূতদের পরিচয়পত্র ক্রেডেনশিয়াল কমিটি ইতিমধ্যে অনুমোদন করে ফেলেছে।’
এখন মিয়ানমার যদি নতুন কাউকে পাঠাতে চায় তবে তাকে পাঠাতে হবে সেপ্টেম্বরের পরে অর্থাৎ ৭৬তম অধিবেশনের জন্য এবং যতদিন না ক্রেডেনশিয়াল কমিটি নতুন রাষ্ট্রদূত অনুমোদন করছে ততদিন ওই ব্যক্তি স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করবেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘১৮ জুন যে রেজুলেশনটি গৃহীত হয়েছে সেটির ফলে মিয়ানমারের নতুন রাষ্ট্রদূতের পক্ষে অনুমোদন পাওয়া কঠিন হবে।’
ওই ক্রেডেনশিয়াল কমিটিতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনসহ মোট সাতজন সদস্য রয়েছে।
এদিকে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১৮ জুন গৃহীত রেজুলেশনে গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। ওই রেজুলেশনে দেশটির গণতান্ত্রিক সমস্যা, জরুরী অবস্থা, রাজনৈতিক বন্দী, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আসিয়ানের কেন্দ্রীয় ভূমিকার প্রতি নজর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রেজুলেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ নজর দেওয়া হয়নি এবং কিভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যাবে সেটি কিছু বলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ আরও কয়েকটি দেশ রেজুলেশনটি প্রস্তাব করে এবং এর পক্ষে ১১৯ সদস্য ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট পড়ে একটি এবং ৩৬ জন অনুপস্থিত ছিল।