গতকালের চারটি কেইস সনাক্তের পর ভিক্টোরিয়ার বৃহত্তর মেলবোর্নের উত্তরে হুইটেলসি এলাকায় আজ আরো একটি ভাইরাস কেইস সনাক্ত হয়েছে, এটি এ মাসের শুরুতে ওলার্ট এলাকায় যে সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছিল তার সাথে ‘সম্পর্কিত’ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার নতুন একটি করোনাভাইরাস কেইস রেকর্ডের প্রেক্ষিতে ভিক্টোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বৃহত্তর মেলবোর্নে নতুন বিধি ঘোষণা করেছে।
আজ মঙ্গলবার মেলবোর্ন সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ব্যক্তিগত বাসস্থানে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ জন অবস্থান করতে পারবে, গণসমাবেশে ৩০ জনে সীমাবদ্ধ থাকবে, এবং ১২ বছর বয়সী বা তার উর্দ্ধে ব্যতিক্রম ভেদে সকলকে ইনডোরে ফেস মাস্ক পড়তে হবে।
ভারপ্রাপ্ত প্রিমিয়ার জেমস মার্লিনো বলেন, এই নতুন সনাক্ত ব্যক্তি ষাটোর্দ্ধ, এবং তিনি গতকালকের সনাক্ত চারজনের মধ্যে কোন একজনের পরিবারের সাথে সম্পর্কিত, তারা সকলে মেলবোর্নের উত্তরের বাসিন্দা।
মিঃ মার্লিনো বলেন, নতুন রেস্ট্রিকশন ঘোষণা করা হয়েছে জনস্বাস্থ্য পরামর্শের ভিত্তিতে।
“এর ফলে সনাক্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খোঁজার সময় পাওয়া যাবে, যাতে সংক্রমণ বিস্তৃত না হয়,” তিনি মেলবোর্নে সাংবাদিকদের একথা বলেন।
তবে কেউ বৃহত্তর মেলবোর্ন ছেড়ে গেলে তাদের ইনডোরে মাস্ক পড়তে হবে এবং যার বাড়িতে যাবে সেখানে দিনে পাঁচজনের বেশি দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না।
এদিকে ভিক্টোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মেলবোর্নে আরো বেশ কিছু সংক্রমিতদের সংস্পর্শে আসা জায়গা বা এক্সপোজার সাইট চিহ্নিত করেছে যেগুলো রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে।
কেউ যদি ঐসব সাইটে উল্লেখিত বিশেষ সময়ে গিয়ে থাকেন তবে তাদের অবশ্যই টেস্ট করিয়ে নিতে এবং বিচ্ছিন্ন থাকতে বলা হয়েছে।
হেলথ মিনিস্টার মার্টিন ফলি বলেন কর্তৃপক্ষ সামনের দিনগুলোতে আরো এক্সপোজার সাইটের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করছে।
যে পরিবারগুলোতে সংক্রমণ হয়েছে সেখানে তিনটি বাড়ির একজন ত্রিশোর্ধ পুরুষ, দুজন সত্তরোর্ধ স্ত্রী-পুরুষ, একজন দু’তিন বছর বয়সী শিশুও রয়েছে, হুইটেলসি এলাকায় তাদের সংক্রমণ গতকাল সোমবার রেকর্ড করা হয়।
মিঃ মার্লিনো বলেন, জিনোমিক সিকোয়েন্স থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে সংক্রমণগুলো ঘটেছে যখন সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হোটেল কোয়ারেন্টিন থেকে আগত ব্যক্তি যেসব জায়গায় গেছে সেখানে ওই ব্যক্তিরাও ছিল।
ভিক্টোরিয়ার চিফ মেডিক্যাল অফিসার ব্রেট সুটোন বলেন, সোমবার প্রথম যে ব্যক্তি টেস্টে পজেটিভ হয়েছিলেন তার সংক্রমণ ছিল বেশ তীব্র, তাই তিনি সামনের দিনগুলোতে আরো লোক সংক্রমিত হতে পারেন বলে কমিউনিটিকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের আরো পজেটিভ কেইসের বিষয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে, এবং আমরা যদি কারো সংস্পর্শে আসি তবে আমরাও পজেটিভ হয়ে পড়বো, এবং এতে আশপাশের লোকেরাও পজেটিভ হয়ে পড়বে।”
প্রফেসর সুটোন যে প্রকৃতির ভাইরাসটি হুইটেলসি প্রাদুর্ভাবের জন্য নিশ্চিত করা গেছে সেটি B1617, গত অক্টোবরে ভারতে পাওয়া গেছে।
যোগ্যও সকলকে ভ্যাকসিন নেয়ার আহবান
এর আগে গতকাল সোমবার প্রফেসর সুটোন লোকজনকে ভ্যাকসিন নিতে আহ্বান জানিয়েছেন, তা না হলে প্রাদুর্ভাব বাড়বে বলে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার মিঃ মার্লিনো একই কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, “আপনি যদি ভ্যাকসিন নিতে যোগ্য হয়ে থাকেন, তবে অপেক্ষা করবেন না, এখন কয়েক মিলিয়ন লোকের ভ্যাকসিন নেয়ার সময় হয়ে এসেছে, তাই আজই ভ্যাকসিনের টিকা নিয়ে নিন।”
সাম্প্রতিক এই সংক্রমণ সনাক্তের আগে ভিক্টোরিয়া প্রায় ৮৬ দিন স্থানীয় সংক্রমণের বাইরে ছিল।