Home International যেসব বিষয়ে একমত হলেন বাইডেন-পুতিন

যেসব বিষয়ে একমত হলেন বাইডেন-পুতিন

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার জেনেভায় দুই নেতার বৈঠকে এ বিষয়ে একমত হন তারা। এছাড়া উভয় দেশে রাষ্ট্রদূত বিনিময়ের ব্যাপারেও একমত হয়েছেন তারা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

জেনেভার ১৮ শতকের গ্র্যান্ড ভিলায় অনুষ্ঠিত দুই নেতার বৈঠককে গঠনমূলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন পুতিন। অন্যদিকে বাইডেনও বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যদিও আগে থেকেই এ শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে কোনও পক্ষের তরফেই খুব বেশি প্রত্যাশা ছিল না। তবে উভয় পক্ষই মনে করেছে, দুই নেতার একসঙ্গে বসা প্রয়োজন।

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, হ্যাকিং, মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও ইউক্রেন ইস্যুর মতো নানা বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে বুধবারের শীর্ষ সম্মেলনের পরে পুতিন জানান, তাদের গঠনমূলক আলোচনায় কোনও বৈরীতা ছিল না।

শীর্ষ সম্মেলেনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুতিন স্বীকার করেন, বৈঠকে বাইডেন মানবাধিকারের বিষয়টি তুলেছেন। রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির পরিণতি এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মস্কোর আচরণ নিয়েও কথা বলেছেন বাইডেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নাভালনির নাম না নিয়েই তাকে কারাগারে পাঠানোর ব্যাপারে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। জেনেভা থেকে আল জাজিরার কিম্বারলি হালকেট জানান, পুতিন নাভালনি সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো উপেক্ষা করেছেন। এর বদলে তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারের বিক্ষোভ এবং ইউএস ক্যাপিটল ভবনে সহিংসতার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার দিকে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন।

কিম্বারলি হালকেট বলেন, এদিনের সংবাদ সম্মেলনেও পুতিন তার সহজাত আচরণ করেছেন। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা এবং প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউনের বিষয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার সমালোচনা থেকে তিনি দূরে থাকতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সমালোচনা করার মতো অবস্থানে নেই।

পুতিন জানান, স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি (স্টার্ট) চুক্তির সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শুরু করবে মস্কো ও ওয়াশিংটন। ২০২৬ সালে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষের আগেই পরবর্তী চুক্তি নিয়ে এ আলোচনা শুরু হবে। কৌশলগত পারমাণবিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে দুই দেশেরই দায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পুতিন বলেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে সাইবার হামলার ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়েছে। উভয় পক্ষই সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা শুরুর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার এজেন্ডা রাশিয়া বা অন্য কারও বিরুদ্ধে নয়; বরং তার এজেন্ডা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলে যাবে। পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

জো বাইডেন জানান, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি রাশিয়ার কারাবন্দি বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির বিষয়টি তুলে ধরেছেন। কথা বলেছেন রাশিয়ায় আটক দুই মার্কিন নাগরিকের বিষয়েও। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়ে আমি কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা না বলে থাকতে পারি?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন বা দেশটির নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা সহ্য করা হবে না। ওয়াশিংটন এর প্রতিক্রিয়া জানাবে। এ বিষয়টি পুতিনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাইডেন জানান, তিনি বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুরও অবতারণা করেছেন। তিনি পুতিনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। সূত্র: আল জাজিরা, ওয়াশিংটন পোস্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here